ট্রেডের আড়ালে বিদেশে অর্থ পাচার রোধে একটি বিশেষায়িত ইউনিট গঠনের পরিকল্পনা নিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। মূলত আমদানি-রপ্তানিতে মিথ্যা ঘোষণা ও ট্রান্সফার প্রাইসিংয়ের মাধ্যমে প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচার হয় বলে এনবিআর মনে করছে।
সম্প্রতি এনবিআর একটি ১০ বছরের মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি রাজস্ব কৌশল চূড়ান্ত করেছে। সেখানে বলা হয়েছে, গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইনটিগ্রিটির (জিএফআই) তথ্য অনুযায়ী, বাণিজ্যের আড়ালে ৭০ শতাংশ অর্থ পাচার হয়ে থাকে।
পাচার রোধে তিনটি উদ্যোগ
প্রথমত, মিথ্যা ঘোষণা ও ট্রান্সফার প্রাইসিংয়ের মাধ্যমে অর্থ পাচার ঠেকাতে দক্ষ কর্মকর্তাদের নিয়ে একটি বিশেষ ইউনিট গঠনের প্রস্তাব এসেছে। এই ইউনিট সংশ্লিষ্ট বিল অব এন্ট্রি তদারকি ও তদন্তে কাজ করবে।
দ্বিতীয়ত, বিদেশি কূটনৈতিক মিশনে রাজস্ব কর্মকর্তাদের জন্য এটাশে পদ সৃষ্টির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এনবিআর মনে করে, বিদেশে পণ্যের প্রকৃত মূল্য নির্ধারণে এই উদ্যোগ কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।
তৃতীয়ত, পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনতে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা, দক্ষ জনবল নিয়োগ, এবং পাচারকারীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়েছে।
বিশাল অঙ্কের অর্থ পাচার
বর্তমান সরকারের প্রকাশিত অর্থনৈতিক শ্বেতপত্র অনুযায়ী, ২০০৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে প্রায় ২৩,৪০০ কোটি ডলার (বর্তমান বাজারদরে প্রায় ২৮ লাখ কোটি টাকা) পাচার হয়েছে। অর্থাৎ বছরে গড়ে ১ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা পাচার হয়েছে।
শ্বেতপত্রে আরও বলা হয়, দুর্নীতিগ্রস্ত রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, আমলা ও আর্থিক খাতের প্রভাবশালী ব্যক্তিরা এই পাচারের সঙ্গে জড়িত। এই অর্থ যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, যুক্তরাজ্য, সংযুক্ত আরব আমিরাত, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুরসহ বিভিন্ন দেশে বাড়ি কেনা ও ব্যবসায় বিনিয়োগের মাধ্যমে পাচার করা হয়েছে।
সম্পাদক - হুসনে মোবারক
প্রকাশক - মো: ইশতিয়াক আহমেদ