বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদের পদত্যাগ বা অপসারণ নিয়ে সারাদিনই ক্রিকেটাঙ্গনে চলেছে উত্তেজনা। অবশেষে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ না করায় তাঁকে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পরিচালক পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি)। ফলে স্বাভাবিকভাবেই বিসিবির সভাপতির পদও হারিয়েছেন তিনি।
গত বছরের আগস্টে ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর এনএসসি মনোনীত পরিচালক হিসেবে বিসিবির সভাপতি হন সাবেক অধিনায়ক ফারুক আহমেদ। যেভাবে তিনি সভাপতি হয়েছিলেন, একই সূত্রেই এবার তাঁকে বিদায় নিতে হলো।
এনএসসি যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তার পেছনে বড় ভূমিকা রেখেছে বিপিএলে ক্রিকেটারদের পারিশ্রমিক ইস্যুতে গঠিত সত্যানুসন্ধান কমিটির প্রতিবেদন। প্রতিবেদনে বিসিবির সার্বিক অব্যবস্থাপনার দায় সরাসরি চাপানো হয়েছে সভাপতির ওপর। এই রিপোর্টকেই সামনে এনে ফারুকের মনোনয়ন বাতিল করে এনএসসি।
এনএসসির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, পরিচালক পদ না থাকায় ফারুক আর কোনোভাবেই বিসিবির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না। এর মধ্য দিয়ে নতুন সভাপতির পথ উন্মুক্ত হয়ে গেছে। আলোচনায় এগিয়ে আছেন আরেক সাবেক অধিনায়ক আমিনুল ইসলাম বুলবুল। তাঁকেই ফারুকের বিকল্প হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে বলে সূত্র জানায়।
এর আগে পরশুদিন বিসিবির আট পরিচালক যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার কাছে ফারুকের বিরুদ্ধে অনাস্থা জানিয়ে লিখিত চিঠি পাঠান। ১০ সদস্যের পরিচালনা পর্ষদের মধ্যে কেবল আকরাম খান—যিনি ফারুকের নিকটাত্মীয়—এই চিঠিতে স্বাক্ষর করেননি।
একইভাবে, এনএসসি কোটায় পরিচালক হিসেবে ফারুকের সঙ্গে আসা নাজমুল আবেদীন ফাহিমও এখন তাঁর বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। নীতিগত ও ক্রিকেটীয় দৃষ্টিভঙ্গিতে ঘনিষ্ঠ হলেও সাম্প্রতিক সময়ে ফারুকের একক সিদ্ধান্ত ও নেতৃত্বের ধরনে তিনি মতভেদে গেছেন বলে জানা গেছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার সময় যাঁরা ফারুককে সমর্থন করেছিলেন, তাঁদের অনেকেই এখন মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। বিশেষ করে সম্প্রতি নির্বাচনে অংশগ্রহণের আগ্রহ প্রকাশ, বিসিবির স্থায়ী আমানত (এফডিআর) অন্য ব্যাংকে স্থানান্তর এবং বিভিন্ন স্থায়ী কমিটির দায়িত্ব এককভাবে বণ্টন নিয়ে ফারুকের বিরুদ্ধে সমালোচনার ঝড় ওঠে।
সব মিলিয়ে, বিসিবির শীর্ষপদে আবারও বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে দেশের ক্রিকেট প্রশাসন।